Home -- Bengali -- Perform a PLAY -- 060 (Christmas – so different 2)
60. ভিন্নভাবে বড়দিনের উদযাপন-২
ঐ একই গ্রামে উক্ত পাহাড়ে আর কেউ কখনো বড়দিনের উৎসব উদযাপন করে নি। ঈসা মসিহের জন্মের বিষয়ে কেউই খুশি হতে পারে নি। কিন্তু টুরিয়ার ক্ষেত্রে তা ছিল ভিন্নতর। উক্ত সকালে গোপনে সে তার ভাইকে মরিয়ম, ইউসুফ ও শিশু মসিহের বিষয়ে খুলে বললো। সে বড়দিন উদযাপন করার ইচ্ছা প্রকাশ করলো। কিন্তু সে জানতোনা তা কিভাবে উদযাপন করতে হয়।
খ্রীষ্টানদের স্কুলে বড়দিনের গাছ রয়েছে, উপহার সামগ্রী রয়েছে, আলোকসজ্জা ও গান বাজতে থাকে, কিন্তু এখানে তেমন কিছুই নেই। সে তার পোশাক পরলো, ময়দা মাখালো, কুয়ো থেকে পানি তুলে আনলো, আর ছাগের দুধ দোহন করলো। এ কাজগুলোতে তার ক্লান্ত মাকে সাহায্য করা হলো আর তাতেই টুরিয়া বড়ই সন্তুষ্ট হলো। বড়দিন উদযাপন করার এটাও একটা উপায়। বিকেল বেলা প্রচুর অতিথীর আগম ঘটলো, সকলে টুরিয়াকে দেখার জন্য উপস্থিত হলো কেননা স্কুলের ছুটির সময়েই টুরিয়াকে বাড়িতে দেখা যায়। তারা সকলে খরগোসের রোস্ট ও রুটি উপভোগ করলো। প্রত্যেকের কাছে তা বড়ই সুস্বাদু লাগলো। খাবার শেষ হলে পর হাসান হঠাৎই বলে বসলো:
হাসান: ‘টুরিয়া, যাবপাত্রে শিশু মসিহের গল্পটা আমাদের কাছেও বলো, যে ঘটনাটি তুমি আজ সকালে আমাকে শুনিয়েছিলে?’
কথাটা শুনামাত্র কলকোলাহল মারাত্মকভাবে স্তব্ধ হয়ে গেল। উক্ত সমাজে মসিহের নাম সমাদ্রিত ছিল না, আর সে কারণে সকলে টুরিয়ার প্রতি বিরক্ত হয়ে পড়লো। তার মামাতো ভাই আরমিন তাকে নিয়ে ঠাট্টা করলো:
আরমিন: ‘তোমার স্কুলে কি ঐ বিষয়ে তোমাকে শিক্ষা দিয়েছে? তুমি তো কখনো বল নি।’
টুরিয়া নিরব থাকলো। নিজেকে একাকি ও অবহেলিত মনে হলো। যেমন মসিহ নিজেকে একাকি দেখতে পেয়েছিলেন বহু বৎসর পূর্বে। সে যা কিছু ঘটুক না কেন, টুরিয়া মসিহে বিশ্বস্ত থাকতে চাইলো। তার পিতা মুখ খুললেন:
পিতা: ‘নিশ্চয়ই টুরিয়া বাইবেলের ঘটনাগুলি বিশ্বাস করে না। আমাদের রয়েছে ভিন্ন ধর্ম সে তা জানে। ঠিক বলছি না টুরিয়া?’
টুরিয়া: ‘কিন্তু আমি ঈসা মসিহের উপর বিশ্বাস রাখি। বেহেশতে যেতে হলে তিনিই একমাত্র পথ। মসিহ বলেছেন: আমিই পথ, সত্য ও জীবন; আমাকে ছাড়া কেউই পিতার কাছে পৌছাতে পারবে না।’ (ইউহোন্না ১৪:৬)
ক্রুদ্ধ দৃষ্টি ও বরফের মতো নিরবতা ১৩ বৎসরের শিশুটির উপর আসড়ে পড়লো। টুরিয়ার কষ্টের কারণ হলো অন্য সকলে মসিহকে প্রত্যাক্ষাণ করে। সে ঘরের বাহিরে ছুটে গেল এবং অঝোরে কাঁদতে লাগলো। কেবলমাত্র সে একাই মসিহকে ভালোবাসে। অন্যরা কেন তাকে প্রেম করে না? এ প্রশ্নের কোনো জবাব টুরিয়ার কাছে ছিল না। হঠাৎ তার ছোট ভাই হাসান তার পাশে গিয়ে দাঁড়ালো।
হাসান: ‘টুরিয়া, আমি তোমার গল্পটি পছন্দ করি। আমিও তোমার মতো হতে চাই।’
টুরিয়ার হাসি পেল। সে আদৌ ভয় পেল না। বড়দিনের আনন্দ তার হৃদয়ে দোলা দিল। সে বড়দিন উদযাপন করলো তার হৃদয়ে মসিহকে স্থান দিয়ে!
লোকবল: ভাষ্যকার, হাসান, আরমিন, টুরিয়া ও পিতা
© Copyright: CEF Germany