Home -- Bengali -- Perform a PLAY -- 117 (Sad Christmas memory 1)
117. বড়দিনের শোকগাথা-১
আনিতি সব ঝেড়ে ফেলে বিছানায় চলে গেল। হঠাৎ কি তার মনে পড়লো; আরে বড়দিন তো! ঐ চিন্তা মাথায় আসাতে লাফ দিয়ে উঠে পরলো।
আনিতিঃ ‘ড্যানি! ড্যানি, তুমি কোথায়?’
ড্যানিঃ ‘সম্মুখের দরজায় দ্রুত চলে এসো, আনিতি।’
আনিতিঃ ‘বাহিরে তুমি কি করছো? তুমি কি অসুস্থ হতে চাও।’
ড্যানিঃ ‘আনিতি, শান্তাক্লোজ এখানে এসেছে। তুমি বলেছিলে এই পাহাড়ে সে আমাদের কাছে আসতে পারবেনা। কিন্তুু আমি আমার লাল ফিতা বাহিরে লটকিয়ে রেখেছি, আর তাকিয়ে আছি! তিনি আমার জন্য কিছু উপহার সামগ্রি নিয়ে এসেছেন।’
আনিতি তাকিয়ে তা দেখলো। একটি বরফের মতো সাদা বিড়ালছানা নরম চটি চাটতেছে। ড্যানি তা ঘরের মধ্যে নিয়ে এলো।
ড্যানিঃ ‘আমি ওর নাম রাখবো সাদা বরফ। আমি খুবই আনন্দিত।’
ড্যানি একবাটি গরম দুধ ছানাটিকে দিল আর আনিতি তার দাদির আরাম কেদারায় বসে তাদের কর্মকান্ড দেখতে থাকলো। চিন্তা করতে করতে তার বিগত ৫ বৎসরের শুভ বড়দিনের কথা মনে জাগলো।
তখন তার বয়স হয়েছিল ৭ বৎসর, তাকে তাদের প্রতিবেশি ও তাদের ছেলে লুকের সাথে গীর্জায় যাবার হুকুম পেয়েছিল। গান ছিল বড়ই হৃদয়গ্রাহী আর পালক শিশু মসিহের বিষয়ে কথা বলছিলেন। কিন্তু সে লোভাতুরা আলকাতরা চুলের বালক লুকের সঙ্গ দিতে পারছিল না। সে আনিতির আদ্রকযুক্ত কুকির জন্য অনুরোধ জানাচ্ছিল। কিন্তু সে তাকে তা দেয় নি, একটাও না! তারপর সে বরফের মধ্য দিয়ে নেচে নেচে বাড়িতে চলে এলো। শুভ বড়দিনের বিকালটাকে উপভোগ করার জন্য অধিক আগ্রহী ছিল। কিন্তু সে যখন তার পিতার বিষন্ন বদন দেখতে পেল তখন সে হতভম্ব হয়ে গেল।
আনিতিঃ ‘মায়ের অবস্থা কি খুবই খারাপ?’
পিতাঃ ‘ঠিকই ধরোছো আনিতি, সে খুবই অসুস্থ। সে তোমার কথা বলছিল।’
নিরবে মায়ের বিছানার কাছে আনিতি চলে গেল। মা তার ক্ষীণ স্বরে তাকে যে কথা বললো সে তা কখনোই ভুলে যাবে না।
মাঃ ‘আনিতি, তোমার জন্য আমার একটা উপহার আছে। এটি একটি শিশু ভাই, তার যত্ন ভালোভাবে নিও।’
আনিতি শিশুটির প্রতি তাকালো। এর তাৎপর্য কি হতে পারে? তারপর তার পিতা তার কাছে আসলো।
পিতাঃ ‘আনিতি, তোমার মা আর আমাদের সাথে থাকবে না। সে বেহেশতে বড়দিন উদযাপন করতে গেছে। সে জানতো সে মারা যাবে, তাই শিশু ড্যানিকে তোমার হাতে দিয়ে গেল।’
আনিতি কেদে কেটে তার পিতার বাহুতে ঘুমিয়ে পড়লো। তার জন্য এটা দিল শোকের বড়দিন।
আনিতি এতটাই চিন্তামগ্ন হয়ে পড়লো যে দাদি রুমের মধ্যে কখন যে প্রবেশ করলো তা বুঝতেই পারলো না।
ড্যানিঃ ‘দাদি, তুমি কি বেহেশতের বিষয়ে আমাদের কিছু বলতে পারো।’
দাদি যখন বললো এমন একটি সুন্দর স্থান যেথা আর কোনো কান্না বা অশ্রু থাকবে না, এ বর্ণনা শুনে ড্যানি খুবই পছন্দ করলো। কিন্তু আনিতির হৃদয়ে তখনও লুকের বিষয়ে একটা খটকা থেকে গেল। তার হৃদয়ে মসিহের জন্য কোনো খালি স্থান রইল না। আর এ কারণেই সকলে উত্তরোত্তর দুর্দশাগ্রস্থ হয়ে পড়ে। পরবর্তি নাটকে দেখতে পাবে এ গল্পের পরিণতি।
লোকবলঃ ভাষ্যকার, আনিতি, ড্যানি, পিতা, মাতা
© Copyright: CEF Germany